আদানির সাথে বিদ্যুৎ চুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি

 ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন থাকলেও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে কোনো বাধা আসবে না। প্রয়োজন হলে বিকল্প দেশ থেকে পণ্য ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিটি বিতর্কিত এবং একপাক্ষিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে এই চুক্তি করা হয়েছে, ফলে বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়নি।

আদানির সাথে বিদ্যুৎ চুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি


রাজধানীর এফডিসিতে গতকাল রোববার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও আর্থিক খাতে সুশাসনের অভাব নিয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।   অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।


ড. ফাহমিদা খাতুন উল্লেখ করেন যে, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক জরুরি অবস্থার প্রেক্ষাপটে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টাকা সরবরাহ করেছে। এই অর্থ কোনো অবস্থাতেই ঋণ বা ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, বর্তমান এবং পূর্ববর্তী কোনো সরকারি কর্মকর্তা গভর্নর বা ডেপুটি গভর্নর পদে নিযুক্ত হতে পারবেন না।


তবুও আমরা লক্ষ্য করছি যে অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সেখানে কর্মকর্তাদের বসানো হয়েছে। অপরাধ করে শাস্তি না পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। অন্যথায়, ক্ষমতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শোষণ ও দুর্নীতির চক্র অব্যাহত থাকবে।  চলমান ব্যাংকগুলোর এত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও পূর্ববর্তী সরকার রাজনৈতিক কারণে অদক্ষ ব্যক্তিদের ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে।


যেখানে স্বজনপ্রীতি ছিল প্রধান বিষয়। সসভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন,, অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গত ১৫ বছরে আর্থিক খাতকে চোরতন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করলেও বর্তমান সরকারের শাসনামলে এটি কেবল চোরতন্ত্র নয়,বরং দখলতন্ত্র, লুটতন্ত্র এবং ডাকাততন্ত্রের চেহারা নিয়েছে। 


পতিত সরকারের শাসনকালে পাচার হওয়া ২৩৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ৭৫ থেকে ৮০টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব ছিল। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ কোটি টাকা দিয়ে ১৪টি মেট্রোরেল এবং ২৪টি পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প তৈরি করা যেত। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণও কম নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের বোঝা এতটাই ভারী যে, তা কেয়ামত পর্যন্ত শোধ করা সম্ভব নয়।


অতীতে ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন পাঁচ তারকা হোটেলে বসে সুদহার ও ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করত, যা বাংলাদেশ ব্যাংক মেনে নিত। তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে লুটপাটের নেতৃত্ব দিয়েছেন দুই সেনাপতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী এবং তৎকালীন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছেন।


Share this post with your friends and family

See previous post See next post